স্থগিত হওয়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা নিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। গত বছর দেওয়া ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষাসহ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা না করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের দেওয়া এই আদেশ শর্তসাপেক্ষে ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার বিচারপতি।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ আদেশ দেন।
এই আদেশের ফলে ওই তিন ব্যাংকসহ আট ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা ১২ জানুয়ারি নির্ধারিত সময়ে হবে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন খান। তিনি বলেন, তিন ব্যাংকের বিষয়ে হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছেলন তা তুলে নিয়ে আট ব্যাংকের পরীক্ষা একত্রে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই, পরীক্ষা যথা সময়েই হবে। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি আজকের বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেডে ৫২৭টি, জনতা ব্যাংক লিমিটেডে ১৬১টি, রূপালী ব্যাংক লিমিটেডে ২৮৩ টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডে ৩৯টি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ৩৫১টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ২৩১টি, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে ১টি ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশে (আইসিবি) ৭০টি পদসহ মোট ১৬৬৩ পদের নিয়োগ পরীক্ষা হবে।
গত রোববার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, কর্মকর্তা ও কর্মকর্তাসহ (ক্যাশ) বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ না করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
গত বছর দেওয়া পৃথক বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
এর আগে ২০১৬ সালের পৃথক বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে তিনটি ব্যাংকে বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করা ২৮ প্রার্থী গত বছরের শেষ দিকে ওই রিটটি করেন।
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে রিট আবেদনকারীরা ওই তিন ব্যাংকের বিভিন্ন পদের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো কোনো পরীক্ষা নেয়নি। তবে ২০১৭ সালে নতুন করে একই পদের জন্য গত বছরের ২৩ ও ২৯ আগস্ট এবং ৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। এর ভিত্তিতে ১২ জানুয়ারি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পদে এমসিকিউ পরীক্ষার দিন নির্ধারণ হয়েছে। এটি বৈষম্যমূলক বলে রিটটি করা হয়। রুলে ওই তিন ব্যাংকের বিভিন্ন পদে নিয়োগসংক্রান্ত ২০১৭ সালের ওই বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির আলোকে পরীক্ষার আগে কেন ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
একসঙ্গে আটটি সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ‘সিনিয়র অফিসারের (সাধারণ) ’ ১ হাজার ৬৬৩টি শূন্য পদে নিয়োগের পরীক্ষা ১২ জানুয়ারি হওয়ার কথা ছিল। এরই মধ্যে ওই পরীক্ষার আসনবিন্যাসও দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের এক ঘণ্টাব্যাপী ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার কথা।