সহকারী প্রোগ্রামার এমন একটা পদ যেখানে প্রোগ্রামিং করতে হবে বা সাধারন কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা যা পারেনা এমন ধরনের কম্পিউটার সম্পর্কিত কাজ করতে হয় । এটাকে কম্পিউটার প্রকৌশলীও বলা যায় । কিন্তু এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে পরীক্ষা পদ্ধত্তি পর্যন্ত রয়েছে বিভিন্ন অসংগতি ।
প্রথমে দেখি এর নিয়োগ সর্ম্পকিত অসংগতি যখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় তখন খোদ পিএসসিতেই একই পদের জন্য একেক সময় একেক ধরনের যোগ্যতা চাওয়া হয় । ১০ ই নভেম্বর ২০১৬ তারিখের একটি বিজ্ঞপ্তিতে আইসিটি অধিদপ্তর ও বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার পদের যোগ্যতা একই বিজ্ঞপ্তিতে ভিন্ন
যেখানে সহকারী প্রোগ্রামার নিয়োগ দেয়া হবে সেখানে যে কোন বিষয়ে মাস্টার্স যোগ্যতা কিভাবে হয় ।যদি কেউ বাংলায় পড়াশুনা করে সে কি করবে এইখানে ।
আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ম্যান্ডেট নিয়ে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে কিন্তু এইসব কম্পিউটার পার্সোনেল নিয়োগ হয় ১৯৮৫ সালের সরকারী নিয়োগ বিধি মোতাবেক ।
এরপরের অসংগতি আরও মারাত্তক পরীক্ষা নির্দিষ্ট পরিমানের বেশী আবেদন পড়লে প্রিলিমিনারী পরীক্ষা গ্রহন করা হয় এবং সেখানে প্রশ্ন করা হয় বাংলা-২৫ ইংরেজী-২৫ সাধারন জ্ঞান-২৫ ও অংক এবং সাধারন বিজ্ঞান-২৫ মোট ১০০ ।
এখন প্রশ্ন হল এখানে কি সাধারন কোন পদের পরীক্ষা হচ্ছে নাকি টেকনিক্যাল কোন পদের পরীক্ষা হচ্ছে এবং যে বিষয়টা এখানে মুখ্য সে বিষয় সম্পর্কে কোন প্রশ্ন নেই তাহলে এই যে টেকনিক্যাল লোক যে ৪ বছর কম্পিউটার বিজ্ঞান বা কম্পিউটার প্রকৌশলে পড়াশুনা করল সে এই বিষয় নিয়ে আর না পড়ে বাংলা, ইংরেজী, সাধারন জ্ঞান, ও সাধারন বিজ্ঞান এই সব বিষয় পড়াশুনা করবে ??? এবং লিখিত পরীক্ষায়ও টেকনিক্যাল থাকে মাত্র ৬০ মার্ক আর বাকি সব থাকে ১৪০ মার্ক । এবং শেষ পর্যন্ত দেখা যায় যোগ্যতা সম্পন্ন লোক পাওয়া যায় না বা যা পাওয়া যায় তাই নেওয়া হয় ।
এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সরকারী প্রতিষ্ঠান সরকার । টেকনিক্যাল যোগ্যতা সম্পন্ন লোক থাকলেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা পদ্ধিতর কারণে পদ খালি থাকছে কিন্তু চাকুরী প্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছে না।
কিন্তু এই পরীক্ষা পদ্ধতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রশ্ন করে সেটা স্ট্যান্ডার্ড হয়। আর প্রিলিমিনারী যদি নিতে হয় তাহলে সোনালী ব্যাংক এইবার যেভাবে নিয়েছে (টেকনিক্যাল-৬০ আর বাকি সব(গণিত+বাংলা+সধারন জ্ঞান)-৪০) সেভাবে নিলেই যোগ্যতা সম্পন্ন লোক পাওয়া সম্ভব ।আমি যে বিষয়ে লোক নিব সে বিষয়ে তার যোগ্যতা যাচাই না করে অন্য বিষয়ে যাচাই করা কতটা যুক্তি সংগত ।
প্রসংগত আরও কিছু কথা সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রত্যেক শ্রেনিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় চালু করেছে তাতে কলেজ( একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে) প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার যে যোগ্যতা নির্ধারন করা হয়েছে তা হল যে কোন বিষয়ে মাস্টার্স ও ৬ মাস মেয়াদি কম্পিউটার প্রশিক্ষন ।
এখন প্রশ্ন হল একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে যে সিলেবাস তা ৬ মাসের প্রশিক্ষন নিয়ে কিভাবে পড়ানো সম্ভব ? যা আদৌ সম্ভব নয় তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ডিজিটাল বানানোর যে স্বপ্ন আমরা দেখছি তা অলিক কল্পনাই থেকে যাবে । বর্তমানে পিএসসির মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয় বিভিন্ন পরীক্ষা পদ্ধত্তি সংস্কার করছেন তাই তার এবং সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি