বাংলাদেশের নদ-নদী সমূহ এবং প্রকারভেদ

বাংলাদেশ বিষয়াবলী সাধারণ জ্ঞান

বাংলাদেশের নদ-নদী সমূহ এবং প্রকারভেদ।
Types of Rivers and List in Bangladesh.
নদ ও নদীর মধ্যে পার্থক্যঃ

নদ ও নদীর মধ্যে পার্থক্য ব্যাকারণগত। সাধারণত যে নদীর নাম নারীবাচক (আ-ই-উ প্রত্যয়ান্ত), তাকে নদী বলে। যেমনঃ পদ্মা, মেঘনা, সুরমা। আর যেগুলা পুরুষবাচক (প্রত্যয়ান্ত নয়) তাকে নদ বলে। যেমনঃ ব্রহ্মপুত্র, কপোতাক্ষ ইত্যাদি। বাংলাদেশে মোট চারটি নদ আছে।

দীর্ঘতম ও বৃহত্তম নদীঃ

যে নদী সবচেয়ে বেশি পথ অতিক্রম করে তাকে দীর্ঘতম নদী বলে। বাংলাদেশের দীর্য়তম নদী মেঘনা ও বিশ্বের দীর্ঘতম নদী নীল নদ।

যে নদীতে প্রতি মিনিটে বেশি পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয় তাকে বৃহত্তম নদী বলে। বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী মেঘনা এবং পৃথিবীর বৃহত্তম নদী আমাজন।

প্রধান নদীঃ

যে সকল নদী সরাসরি কোনো প্রাকৃতিক উৎস থেকে সৃষ্টি হয় তাকে প্রধান নদী বলে। যেমনঃ- পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি।

শাখা নদীঃ

যে নদী অন্য কোনো নদী থেকে সৃষ্টি হয় তাকে শাখা নদী বলে। যেমনঃ- বুড়িগঙ্গা হচ্ছে ধলেশ্বরী নদীর শাখা নদী।

উপনদীঃ

পর্বত বা হ্রদ থেকে সৃষ্ট যে নদী অন্য কোনো নদীতে মিশে তাকে উপনদী বলে। যেমনঃ- নাগর, টাঙ্গন ইত্যাদি।

উপত্যকাঃ

যে খাতের মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়, তাকে ঐ নদীর উপত্যকা বলে।

নদী গর্ভঃ

নদী উপত্যকার তলদেশকে নদীগর্ভ বলে।

আন্তঃসীমান্ত নদী বা অভিন্ন নদীঃ

যে নদী এক বা একাধিক দেশের রাজনৈতিক সীমান্ত অতিক্রম করে তাকে আন্তঃসীমান্ত বা অভিন্ন নদী বলে। যেমনঃ- পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি।

মোহনাঃ

নদী যখন কোনো সাগর বা হ্রদে পতিত হয়, পতিত স্থানকে মোহনা বলে।

দোয়াবঃ

প্রবাহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমিকে ‘দোয়াব’ বলে।

নদীর প্রশস্ত মোহনাকে বলা হয় খাড়ি। দুই নদীর মিলন হওয়াকে নদী সঙ্গম বলে।

নদী শিকাস্তি ও পয়স্তিঃ

নদী ভাঙ্গনে স্বস্বান্ত জনগণকে বলা হয় নদী শিকাস্তি। আর নদীর চর জাগলে যারা চাষাবাদ করে তাদের বলা হয় নদী পয়স্তি।

বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৩০ বছরের মেয়াদি গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ঃ ১৯৯৬ সালে।

বাংলাদেশ নদী গবেষণা ইন্সটিটিউট ফরিদপুর জেলায় অবস্থিত।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তি ও সমাপ্ত নদীঃ হালদা ও সাঙ্গু নদী।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করা নদী একটি কুলিখ। বাংলাদেশ থেকে ভারত গিয়ে পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করা নদী চারটিঃ- মহানন্দা, আত্রাই, পুনর্ভরা, ট্যাঙ্গন।

বাংলাদেশে মোট আন্তঃসীমা নদী আছে ৫৭টি। ৫৪টি ভারতের সাথে ও ৩টি মিয়ানমারের সাথে (সাঙ্গু, মাতামুহরী, নাফ)।

বাংলাদেশে মোট নদী আছেঃ ৭০০টি। অধিক নদীর কারনে একে নদীমাতৃক দেশ বলা হয়। নদীপথের দৈর্ঘ্যঃ- ২৪,১৪০ কি.মি.।

বাংলার দুঃখঃ দামোদার নদী।

পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ যে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিতঃ ময়মনসিংহ।

বাঙ্গালি নদীটি যে জেলায় অবস্থিতঃ বগুড়া।

পশ্চিমাঞ্চলের লাইফলাইনঃ গড়াই নদী।

ব্যক্তির নামে নদীঃ রুপসা (রূপলাল সাহ)।

পাকিস্তানি বাহিনীর নদীঃ ডাকাতিয়া।

নদীর নামে জেলাঃ ফেনী।

বিভিন্ন ফেরিঘাটঃ পাটুরিয়া-আরিচা (মানিকগঞ্জ), মাওয়া (মুন্সীগঞ্জ), কাওরাকান্দি (মাদারীপুর)।

বাংলাদেশ-ভারত প্রথম মৈত্রী সেতু নির্মিত হচ্ছেঃ ফেনী নদীর উপর।

নদীর উপনদী ও শাখানদী

নদীউপনদীশাখানদী
পদ্মামহানন্দা, পুনর্ভববাভৈরব, মধুমতি, আড়িয়াল-খাঁ, গড়াই, কুমার
মেঘনাতিতাস, গোমতী, মুন
ব্রহ্মপুত্রধরলা, তিস্তাযমুনা, বংশী, শীতলক্ষা
যমুনাকরতোয়া, আত্রাইধলেশ্বরী
কর্ণফুলিহালদা, বোয়ালখালি
ধলেশ্বরীবুড়িগঙ্গা
ভৈরবকপোতাক্ষ, পশুর

শাখা নদী নেইঃ কর্ণফুলী, মেঘনা, মহানন্দা।

ধলেশ্বরী, ভৈরব।

নদী তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা

স্থাপনানদী
লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, বাঁকল্যান্ড বাঁধবুড়িগঙ্গা
সোনারগাঁশীতলক্ষা
সোমপুর বিহারআত্রাই
বাংলা স্থলবন্দরমহানন্দা
ফেন্সুগঞ্জ সার কারখানাকুশিয়ারা
তিস্তা বাঁধতিস্তা
ফারাক্কা বাঁধগঙ্গা
যমুনা সার কারখানাযমুনা

 

নদীর উৎপত্তিস্থল

নদীঅপর নামউৎপত্তিস্থলপ্রবেশস্থলমিলনস্থলভ্রমণস্থলঅন্যান্য
পদ্মাগঙ্গা/নলিনী, কীর্তিনাশাহিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহচাঁপাইনবাবগঞ্জ/রাজশাহীযমুনা (গোয়ালন্দ)ভারত, চীন, নেপাল, বাংলাদেশআন্তর্জাতিক নদী, বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়নি ফারাক্কা বাঁধ
মেঘনাবরাকআসামের নাগা মনিপুরের দক্ষিণে লুসাই পাহাড়সিলেটমেঘনা (চাঁদপুর)দীর্ঘতম ও বৃহত্তম, অধিক নাব্য নদী, সর্বাধিক নদী বন্দর, টিপাইমুখ বাঁধ
বর্ণফুলিমিজোরামের লুসাই পাহাড়চট্টগ্রামবঙ্গোপসাগরসবচেয়ে খরস্রোতা নদী, কাপ্তাই জলবিদুৎ কেন্দ্র
ব্রহ্মপুত্রলৌহিত্য ডিহি (ভারতীয়) সানপো (তিব্বত)তিব্বতের কৈলাশ শৃঙ্গকুড়িগ্রামচীন, ভারত, ভুটান, বাংলাদেশদীর্ঘতম ও প্রাচীনত নদ
গোমতিত্রিপুরা পাহাড়জোয়ার ভাটা হয়না, কুমিল্লার দুঃখ
যমুনা (ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা)জোনাইদেওয়ানগঞ্জ, জামালপুর১৭৮৭ সালে ভুমিকম্পের ফলে, প্রশস্ততম নদী সর্বাধিক চরবিশিষ্ট
তিস্তালালমনিরহাটযমুনা (কুড়িগ্রাম)তিন বিঘা করিডোর অবস্থিত
বুড়িগঙ্গাদোলাই খালসবচেয়ে দূষিত নদী
হালদাখাগড়াছড়িসুন্দরবনবাণিজ্যিকভাবে রেনু উৎপাদন, এশিয়ার সর্ববৃহৎ মৎস প্রজনন কেন্দ্র, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বিভক্তকারী
গোবরাক্ষুদ্রতম নদী
নাফমিয়ানমারবাংলাদেশ ও মিয়ানমার বিভক্তকারী

 

স্মৃতি বিজরিত নদী

ব্যাক্তিনদী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরপদ্মা
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়পদ্মা
জসীমউদ্দিনআড়িয়াল খাঁ
এস.এম. সুলতানচিত্রা
শাহ আব্দুল করিমসুরমা
মধুসূদন দত্তকপোতাক্ষ
অদ্বৈত মল্লবর্মণ, আল-মাহমুদতিতাস
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানমধুমতি

 


মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Related posts

error: Content is protected !!